দেশের ১৮ জন বিশিষ্ট নাগরিক এক বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে ‘ভ্যাকসিন-বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি মহল সক্রিয় হয়ে উঠেছে’ বলে অভিযোগ করেছেন। তারা বলেছেন, ‘ভ্যাকসিন আমদানির আলোচনা ও সিদ্ধান্ত এবং জনগণকে টিকাদানের সমগ্র দায়-দায়িত্ব যেহেতু সরকার পালন করছে, তাই ভ্যাকসিন আমদানিতে কোনো মধ্যস্বত্বভোগীর ভূমিকা গ্রহণের সুযোগ নেই। সরকার এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেবে, সেটা আমাদের প্রত্যাশা।’ সোমবার (৭ জুন) সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসিরউদ্দীন ইউসুফ স্বাক্ষরিত এক যৌথ বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়।
বিবৃতি দাতারা হলেন—সাংবাদিক আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী, কথা সাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক, অধ্যাপক অনুপম সেন, নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, ফেরদৌসী মজুমদার, মামুনুর রশীদ, বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরি মানিক, সাংবাদিক আবেদ খান, অধ্যাপক আবদুস সেলিম, গবেষক মফিদুল হক, ডা. আমজাদ হোসেন, ডা. ফওজিয়া মোসলেম, ডা. রশিদ, এ মাহবুব, ডা. কামরূল হাসান খান, অধ্যাপক এ বি এম ফারক, সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির, নাসির উদ্দীন ইউসুফ ও অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন।
বিবৃতি দাতারা বলেন, ‘কভিড-১৯ সংক্রমণের অতিমারিতে আক্রান্ত বিশ্বে বাংলাদেশের নাগরিকদের জীবন নিরাপদ এবং অর্থনীতি সচল রাখার জটিল সমস্যা মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার যেসব ব্যবস্থা নিয়েছে, তার অনেক ইতিবাচক দিক আমাদের আস্থা যুগিয়েছে। সংক্রমণ রোধে টিকাদানের ব্যবস্থাপনা এবং তার বাস্তবায়ন সর্বমহলের প্রশংসা অর্জন করেছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের সঙ্গে শীর্ষ পর্যায়ে আলোচনা করে ভ্যাকসিন সংগ্রহের যে ব্যবস্থা করেছিলেন তা’ ভারতজুড়ে অভাবিত রোগ সংক্রমণের কারণে বিপর্যস্ত ও বন্ধ হয়ে যায়।
পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিদেশ মন্ত্রণালয় রাশিয়া ও চীন থেকে ভ্যাকসিন সংগ্রহের প্রচেষ্টা শুরু করে। একই সঙ্গে চীন ও রাশিয়ার ভ্যাকসিন সিনোফার্মা এবং স্পুটনিক দেশে উৎপাদনের জন্য সরকারিভাবে ফলপ্রসূ আলোচনা শুরু হয়। এর পাশাপাশি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ফোরামে ভ্যাকসিন উৎপাদনে সক্ষম দেশগুলোর জন্য বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদে অধিকার শিথিল করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। আমরা সরকারের এইসব পদক্ষেপের সঙ্গে সহমত পোষণ করে জরুরি ভিত্তিতে এর বাস্তবায়ন প্রত্যাশা করি।’
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডব্লিউটিও এবং অন্যান্য ফোরামে ভ্যাকসিন উৎপাদনে বুদ্ধিবৃত্তিক সুরক্ষা শিথিলের যে দাবি তুলেছেন তা’ বিশ্বমানবের সার্বজনীন অধিকারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। আমরা এই দাবির পক্ষে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে সোচ্চার হওয়ার জন্য নাগরিক সমাজের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে সক্ষম দেশীয় ঔষধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানসমূহ দ্বারা ভ্যাকসিন উৎপাদনের দ্রুত বাস্তবায়ন অত্যন্ত জরুরি। বাংলাদেশের জন্য করোনা মোকাবেলায় ভ্যাকসিন উৎপাদনের কোনো বিকল্প নেই। তাই দেশজ উৎপাদন বাস্তবায়নে যুদ্ধকালীন জরুরি পরিস্থিতির ন্যায় সরকার পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন, সেটা সবার কাম্য।’