দেশের বিরাজমান নৈরাজ্য থেকে জনদৃষ্টি ভিন্নখাতে ফেরাতেই সরকার আলেমদের মাঠে নামিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
দেশে চলমান ভাস্কর্যবিরোধী আন্দোলনের প্রতি ইঙ্গিত করে আলেম নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেছেন, ‘আমি আলেমদের বলি, অযথা এসব বির্তকে না জড়িয়ে আন্দোলনে আসেন। দ্রব্যমূল্য বেড়েছে, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হচ্ছে না সেই আন্দোলনে নামুন। সরকারের কিছু পয়সা পেয়ে তাদের কথায় নাইচেন না, তাদের কথায় নাচলে আপনাদেরই ক্ষতি হবে।’
শুক্রবার (০৪ ডিসেম্বর) এক সংক্ষিপ্ত মানববন্ধনে তিনি এ অভিযোগ করে বলেন, ‘আজকে চারিদিকে যে নৈরাজ্য, এই নৈরাজ্য থেকে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে সরানোর জন্য সরকারই আলেমদের বিপথে চালিত করছে।’
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ লেবার পার্টির উদ্যোগে স্বাস্থ্যখাতে নৈরাজ্য ও দুর্নীতি বন্ধ ও ওষুধের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে এ মানবন্ধন হয়।
ঢাকা মহানগরে পুলিশের পূর্বানুমতি ছাড়া সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্তের আবারও কঠোর সমালোচনা করে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আজকে হঠাৎ নোটিশ দিয়েছে ডিএমপি (ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ)। আমি বলি, পুলিশ সরকারের খাদেম নয়, জনগণের খাদেম।’
তিনি বলেন, ‘পুলিশের শত অভাব-অভিযোগ আছে। আজকে পুলিশ অফিসারদের সরকারি বাড়ি-ঘর নেই। তাদেরকে বাইরে গিয়ে থাকতে হয় তাদের বেতনের চেয়ে বেশি ভাড়া দিয়ে। এই অবস্থায় থাকলে তারা ঘুষ খাবে না তো কী করবে। পুলিশ বাহিনীর প্রতি আমার আবেদন থাকবে, অন্যায় নির্দেশে আপনারা শুনবেন না।’
ওষুধের মূল্যবৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আজকে ওষুধ থেকে শুরু করে প্রত্যেকটা দ্রব্যের মূল্য বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকার যদি নীতি মানে ১৫ দিনের মধ্যে ওষুধের দাম কমপক্ষে অর্ধেক হবে। ১৯৮২ সালের যে ওষুধ নীতি করা হয়েছে সেখানে পর্যাপ্ত লাভ দিয়ে ওষুধের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।’
ডা. জাফরুল্লাহ আরও বলেন, ‘ভ্যাকসিন নিয়ে কোনো তাড়াহুড়ার কারণ নাই। এই ভ্যাকসিন প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত এটা…। আপনাদেরকে একটা কথা বলি- ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে পরিষ্কারভাবে লিখেছে, তাড়াহুড়া করলে ভ্যাকসিন ভালোভাবে চেক করা যায় না।’
বাংলাদেশে ভ্যাকসিন আনার বিষয়ে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আপনারা জানেন, ভ্যাকসিন আনতে সালমান এফ রহমানের বেক্সিমকোর মাধ্যমে চুক্তি করেছে বাংলাদেশ সরকার। সেটা ২ ডলার কমে পেতো যদি সরকারি কোম্পানি বিটিসিএলের মাধ্যমে আনা হতো। সরকারকে বলি, এটা আপনার বাবার পয়সা না, এটা জনগণের পয়সা। অপব্যয় করার অধিকার আপনার নেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনাকেও তারা বোকা বানাচ্ছেন, অনুগ্রহ করে ন্যায়-নীতির দিকে থাকেন।’
লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের সভাপতিত্বে মানবন্ধনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার ও বিএনপির প্রান্তিক জনশক্তিবিষয়ক সম্পাদক অর্পনা রায় বক্তব্য রাখেন।
মানববন্ধনে লেবার পার্টির সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার ফরিদ উদ্দিন, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব লায়ন ফারুক রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক হুমাউন কবির, আবদুর রহমান খোকন, বিএনপির রফিক শিকদার, সেলিনা সুলতানা নিশিতা, আরিফা সুলতানা রুমা, সানজিদা ইয়াসমীন তুলি, কৃষকদলের রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।