Breaking News

চীন ও ভারতের চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের একটি ভ্যাকসিন গুরুত্ব পাচ্ছে বাংলাদেশে

চীন ও ভারতের ভ্যাকসিন বাংলাদেশে ট্রায়াল ও উৎপাদনের বিষয়টি আলোচনায় থাকলেও দেশে এখন বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ভ্যাকসিন ‘এমআরএনএ-১২৭৩’। মানের দিক থেকে চীন ও ভারতের চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভ্যাকসিনের প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, শুধু তিনটি নয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নজরদারিতে বিশ্বে বর্তমানে যে আটটি ভ্যাকসিন তৃতীয় ধাপে রয়েছে, এর অন্তত চারটির ওপর নজর রাখছে বাংলাদেশ সরকার। যার মধ্যে মানগত দিক থেকে সবার ওপরে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মডার্না ও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের ‘এমআরএনএ-১২৭৩’। দ্বিতীয় অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও অক্সফোর্ডের (ChAdOx1), তৃতীয় চীনের সিনোভেক বায়োটেকের ‘করোনাভেক’। এর বাইরে দ্বিতীয় ধাপের ট্রায়ালে থাকা ভারতের ভারত বায়োটেক ও ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চের ‘কোভ্যাকসিন’ রয়েছে বিশেষ বিবেচনায়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (মা ও শিশু স্বাস্থ্য) ডা. মো. সামসুল হক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা হয়েছে।’ মডার্নার ভ্যাকসিনের ব্যাপারে বিশেষজ্ঞরা জানান, গত ২৭ জুলাই থেকে মডার্না ৩০ হাজার মানুষের ওপর তাদের ভ্যাকসিনটির তৃতীয় ধাপের চূড়ান্ত পরীক্ষা করেছে। গত মার্চে পরীক্ষামূলকভাবে এই ভ্যাকসিন প্রথম মানুষের শরীরে প্রয়োগ করা হয়। এতে সাফল্যের পর দ্বিতীয় ধাপেও সাফল্য আসে তাদের।

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বিশ্বে এ পর্যন্ত অন্তত ১৩৫টি ভ্যাকসিন আবিষ্কারের কাজ বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে। এর মধ্যে ২১টি রয়েছে প্রাথমিক পর্যায়ে বা প্রথম ধাপে, ১৩টি দ্বিতীয় ধাপে আর আটটি রয়েছে তৃতীয় ধাপে। অন্যদিকে দুটি অনুমোদন পেয়েছে নিজ দেশের সরকারের কাছ থেকে। রাশিয়া ও চীনের একটি করে ভ্যাকসিন স্বদেশে চূড়ান্ত অনুমোদন পেলেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এখনো ভ্যাকসিন দুটিতে আস্থা রাখছে না। সে সঙ্গে বিশ্বের বেশির ভাগ দেশেরই ভ্যাকসিন দুটির প্রতি আগ্রহ কম।

বাংলাদেশেও ভ্যাকসিন দুটি নিয়ে অতটা আগ্রহ দেখা যায়নি। তবে কিছুদিন ধরে বাংলাদেশে আলোচনায় রয়েছে চীনের সিনোভেক কম্পানি ও অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন। এদিকে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনটি ভারতের একটি প্রতিষ্ঠানে উৎপাদনপ্রক্রিয়া শুরুর পাশাপাশি ভারতের একটি প্রতিষ্ঠানও ভ্যাকসিন আবিষ্কারের কাজ এগিয়ে নিচ্ছে। এ নিয়ে চীন আর ভারতের সঙ্গে চলছে নানামুখী তৎপরতা। এর সঙ্গে হঠাৎ যুক্ত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও মডার্না কম্পানির যৌথ উদ্যোগে আবিষ্কারের তৃতীয় ধাপে থাকা ‘এমআরএনএ-১২৭৩’ ভ্যাকসিনের বিষয়টি।

এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সিনিয়র ভ্যাকসিন বিশেষজ্ঞ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘নানামুখি সম্পর্কের কারণে চীন ও ভারতকে এড়ানো সম্ভব নয় বলে তাদের সঙ্গে রেখে যুক্তরাষ্ট্রের ভ্যাকসিনের বিষয়ে যোগাযোগ শুরু করেছে সরকার। এ ছাড়া চীন ও ভারতের ভ্যাকসিন নিয়ে কোনো ধরনের জটিলতা তৈরি হলে যুক্তরাষ্ট্রের ভ্যাকসিন রক্ষাকবচ হিসেবে যাতে পাওয়া যায়, সেদিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।’

ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের উপপরিচালক সালাহউদ্দিন আহম্মেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘দেশে দুটি কম্পানির ভ্যাকসিন উৎপাদনের ইউনিট রয়েছে। যেকোনো দেশের ভ্যাকসিন উৎপাদনে সাড়া পাওয়া গেলে যাতে উৎপাদন করা যায় সে জন্য ওই দুটি প্রতিষ্ঠানকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। উৎপাদন ছাড়াও প্রয়োজন মতো যাতে ভ্যাকসিন আমদানি করা যায় তা নিয়ে কাজ চলছে।’

বাংলাদেশ ফার্মাকোলজি সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ভারত ও চীনের ভ্যাকসিনের সঙ্গে ট্রায়ালের বিষয়টি যেভাবে জড়িয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে তেমনটা দরকার নেই। সরকার কিংবা কোনো প্রতিষ্ঠান চাইলেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন পাওয়ার পর ওই ভ্যাকসিন সরাসরি আমদানি করতে পারবে। দেশে আলাদা ট্রায়াল না করলেও সমস্যা হবে না। তবে মডার্না যদি চায় তারা এই দেশে আবার ট্রায়াল করবে কিংবা বাংলাদেশ সরকার যদি চায় ট্রায়াল না করে কোনো ভ্যাকসিন আনবে না, তবে ট্রায়াল হতে পারে।’

অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান আরো বলেন, ‘আমরা অনেক দিন ধরে ট্রায়াল নিয়ে আলোচনা করছি, কিন্তু সরকার এখনো কোনো দেশের ভ্যাকসিনের ট্রায়ালের অনুমোদন দেয়নি। যেকোনো দেশের ভ্যাকসিনের ট্রায়াল শুরু করলে একটি ভালো কাজ হতে পারত।’ অন্যদিকে দেশে বড় কয়েকটি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানও প্রতিযোগিতায় নেমেছে কে কোন দেশের ভ্যাকসিন থেকে সুবিধা পেতে পারে। আবার কয়েকটি কম্পানি ভ্যাকসিন আমদানির সুযোগ পেতে চেষ্টা চালাচ্ছে।

Check Also

লন্ডনের জনপ্রিয় রেস্টুরেন্টে শেফ নিয়োগ, আপনি ও যোগাযোগ করতে পারেন!

উত্তর লন্ডনের জনপ্রিয় রেস্টুরেন্ট টিফিনস ক্লাবে ১ জন হেড বাবুর্চি (chef) এবং ১ জন সহকারী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *