২২ জুন অনলাইন জুম বৈঠকে দেওয়া বক্তব্যে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান এবি পার্টি সম্পর্কে দলের মূল্যায়ন তুলে ধরেন। বাংলা ট্রিবিউনের কাছে ভিডিওক্লিপটি সংরক্ষিত আছে। সেখানে তিনি জুম বৈঠকে উপস্থিত আরেক নেতার প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আমার এই ভাইটি জানতে চেয়েছেন এবি পার্টি সম্পর্কে।
কিছু লোক এই দলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখে তাদের ব্যাপারে আমাদের করণীয় কি? এই পার্টিটা গঠন হয়েছে গত মে মাসের ২ তারিখে। তারা তাদের দলীয় মেনিফেস্টো ঘোষণার সময় ঐদিনই বলেছেন- এই পার্টির নীতি হবে কর্মকৌশল হবে তিনটি জিনিসের ওপর ভিত্তি করে। সেগুলো হচ্ছে সাম্য, সামাজিক সুবিচার ও মানবাধিকার। এটার ওউপরে তারা কাজ করবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘সম্মানিত ভাইয়েরা, তারা পরিষ্কার করে বলেছে যে, তাদের কর্মসূচিতে তাদের এজেন্ডায় ধর্ম ও মুক্তিযুদ্ধের এই চাপ্টার থাকবে না। এটাকে বাদ দিয়েই হবে তাদের সবকিছু। ফলে আমাদের আর কিছু বলার প্রয়োজন নেই। আমাদের ভাইয়েরা একেবারে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন।
কারণ দ্বীন তাদের সাবজেক্ট নয়। আর দ্বীনটাই আমাদের সাবজেক্ট। এই জায়গায় এই ভাইদের সাথে আমাদের আদর্শিক পথ একেবারে আলাদা হয়ে গেল। এখন তারা একসময় আমাদের ভাই ছিলেন, আমাদের প্রিয় মানুষ ছিলেন। এখন আমরা কী করবো এই ভাইদের ব্যপারে?’’
‘আমরা তাদের জন্য দোয়া করবো’ জানিয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আল্লাহ যেন তাদের কে দ্বীনের পথে আবার পরিপূর্ণ ভাবে ফিরিয়ে আনেন। মুসলমানের জীবন কখনও খণ্ডিত হতে পারে না। তার জন্ম থেকে ওফাত পর্যন্ত তার প্রত্যেকটি অবস্থান হবে দ্বীনের ওপরে কোরআনের গাইড লাইন অনুযায়ী রাসুলে করীম (সা) এর সুন্নাহ মোতাবেক। এর বাইরে যাওয়ার কোনও সুযোগ নেই।
এক জায়গায় থেকে আরেক জায়গায় জুড়ে দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। জোড়াতালির কোনও সুযোগ নেই। দ্বীনে এলাহিরও কোনও সুযোগ নেই। সুযোগ একটাই সেটা হলো আল্লাহর দ্বীন মেনে চলা পরিপূর্ণভাবে। কারণ আল্লাহ তায়ালা এই দ্বীনটাকে একেবারে পরিপূর্ণ এবং এটিকে একেবারে খণ্ডিত করতে আল্লাহ নিষেধ করেছেন।
‘আফা তু মিনুনা বি-বা’দিল কিতাব অ তাক ফুরুনা বিবাদ’ আল্লাহ তার একটা অংশকে ঈমান আনা আর একটা অংশকে তাকফির বা অস্বীকার করাকে চরমভাবে ঘৃণা করেছেন। এর সুযোগ আমাদের নেই।’‘তাই এই ভাইদের জন্য দরদভরা মন নিয়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করতে হবে’ উল্লেখ করেন জামায়াতের আমির। তিনি বলেন, ‘তাদের সঙ্গে কোনও বিতর্কে জড়ানোর প্রয়োজন নেই।
আমাদের প্রিয় সঙ্গী-সাথীরা যারা আল্লাহকে পাওয়ার জন্য, আখেরাতে নাজাত পাওয়ার আশায়, জান্নাতে যাওয়ার আশায় এবং দুনিয়াকে জান্নাতময় দ্বীনের আলোকে করার আশায় যারা এখানে এসেছেন সে সমস্ত ভাইদের প্রতি আমাদের সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে, তাদেরকে কাছে টেনে রাখতে হবে।
কেউ কারও অসওয়াসায় (প্ররোচনা) পড়ে তারা যাতে নিজেদের ভবিষ্যত হারিয়ে না ফেলেন, ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে না যান, এইজন্য পেরেশানির সঙ্গে তাদেরকে ধরে রাখতে হবে সাহচর্য দিতে হবে এটাই আমাদের কাজ।’নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘তাদের সঙ্গে কোনও বিতর্কে জড়াবেন না।
তাদের কোনও প্রশ্নের জবাব দেবেন না। তাদের সঙ্গে অবশ্যই ফেসবুক চ্যাটিং এ লিপ্ত হবেন না। পজিটিভ ও না নেগেটিভও না। শুধু আল্লাহর কাছে দোয়া করুন। আর যার যেখানে ব্যক্তিগত সম্পর্ক আছে তাদেরকে বুঝান দ্বীন ছাড়া মুক্তির আর কোনও জায়গা নেই। দুনিয়াতে তো নেই, আখেরাতে তো একেবারেই নেই।’