Breaking News

চেয়ারম্যানের চাল চুরি যার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে, উল্টো সেই ইউএনও কেই প্রত্যাহার!

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাঈকা সাহাদাতের বিরুদ্ধে ১৫ টন চাল কেলেংকারিতে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠেছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ইউএনও পদ থেকে তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩০ এপ্রিল) রাতে জারিকৃত এক প্রজ্ঞাপনে তাকে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চেয়ে পূর্বপশ্চিম ফোনে কথা বলে সাঈকা সাহাদাতের সঙ্গে। তিনি চাল আত্মসাতে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, সরকারি বরাদ্দের চাল কালোবাজারির অভিযোগ থেকে টৈটং ইউপি চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম চৌধুরীকে বাঁচাতেই স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল তাকে ফাঁসিয়েছে।

তিনি বলেন, নিয়ম অনুযায়ী ডিও লেটারের মাধ্যমে করোনায় অসহায়দের ত্রাণ হিসেবে চালটা ইউপি চেয়ারম্যানের নামে বরাদ্দ দেই। ওই চাল বিতরণের পর উনার মাস্টার রুলস মানে বিতরণের কপি আমাদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়ার কথা। কিন্তু তিনি সেটা জমা দেন নাই। আমার কাজটা হলো মাস্টার রুলস কাগজটা চেক করা। বিতরণের কপিই আমার কাছে আসেনি। যার কারণে আমি তা জমা দিতে পারিনি। এটাকে ইস্যু করেই আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু হয়।

সাঈকা সাহাদাত বলেন, ত্রাণের চাল বরাদ্দ নিয়ে জেলা পরিষদ কার্যালয় থেকে একটা তদন্ত হয়েছিল। এতে ইউপি চেয়ারম্যানকেই দায়ী করা হয়। তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগের ডকুমেন্টসও আছে। কিন্তু তিনি দায়ী হওয়ার পর নিজেকে রক্ষা করতে একটা ডার্টি পলেটিক্স করেন। স্থানীয় সাংবাদিকদের দিয়ে নানাভাবে ম্যানেজ আমার বিরুদ্ধে নানারকম নিউজ মানে অপপ্রচার শুরু করেন। এই অপপ্রচারের বিষয়টিই খতিয়ে দেখতে আমাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

চাল আত্মসাৎ বা অবৈধ লেনদেনের সঙ্গে জড়িত নন দাবি করে পেকুয়ার সদ্য সাবেক ইউএনও বলেন, আমি এখানে যোগ দেওয়ার পর শত শত টন চাল এসেছে। সেগুলো থেকে কখনো একটাও আত্মসাতের অভিযোগ আমার বিরুদ্ধে ওঠেনি।মাস্টার রুলস হাতে না আসায় ১৫ টন চালের সঙ্গে আমাকে জড়ানো হয়েছে।

তিনি বলেন, ইতিমধ্যে ওই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। লিগ্যালি অ্যাকশন নিয়েছি্ । আমার প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আর এ জন্য তিনি আর তার অনুসারিরা ও একটি প্রভাবশালী মহল আমাকে ফাঁসানোর পায়তারা শুরু করে। আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়েই তারা ঠিক করে এই টিএনওকে সরাতে হবে।

এজন্য তারা হাতিয়ার হিসেবে লোকাল সাংবাদিকদের ব্যবহার করেন। টইটং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ১৫ টন চাল আত্মসাতের ওই মামলাকে কেন্দ্র করেই স্থানীয় প্রভাবশালী মহল ক্ষীপ্ত হয় এবাং তাকে যেভাবে হোক পেকুয়া থেকে সরনোর পরিকল্পনা করে বলে দাবি করেন সাঈকা সাহাদাত।

তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে উত্থাপিত কোনো অভিযোগ সত্য নয়। কিসের ভিত্তিতে উনাদের এই অভিযোগ, কোনো ভিত্তি নেই এসবের। এতে আমার মান-সম্মান নষ্ট হচ্ছে। আমার মানহানি করা হচ্ছে। অথচ আমি দূর্নীতি করেছি, এমন কোনো এভিড্যান্ড কেউ দেখাতে পারবে না। আমি চাই সবাই প্রকৃত সত্যটা জানুক।

এদিকে চাল কেলেংকারিসহ ইউএনও সাঈকা সাহাদাতের নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের সংবাদ প্রকাশের পরপরই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় তাকে পেকুয়া থেকে প্রত্যাহার করে নতুন ইউএনও নিয়োগ দেয় হয়। বৃহস্পতিবার (৩০ এপ্রিল) চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) শংকর রঞ্জন সাহা স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে নাজমা সিদ্দিকা বেগমকে আগামী ৩ মে’র মধ্যে নতুন কর্মস্থলে যোগদান এবং সাঈকাকে কমিশনার কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হযেছে।

Check Also

অধ্যাপক গোলাম আযম একটি নাম, একটি ইতিহাস

অধ্যাপক গোলাম আযম একটি নাম, একটি ইতিহাস। তিনি বিশ্বনন্দিত ইসলামী চিন্তাবিদ, ভাষা আন্দোলনের নেতা, ডাকসুর …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *