ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক অন্তঃসত্ত্বা নারীকে চিকিৎসা দিতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন কর্মরত ২৭ জন চিকিৎসক, ১৩ জন নার্স ও ৩২ জন স্টাফ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে ১৬ এপ্রিল শেরপুর থেকে আসা এক অন্তঃসত্ত্বা নারী ভর্তি হন। ১৭ এপ্রিল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ওই নারীর ছেলে সন্তানের জন্ম হয়।
ওই নারীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত ১৮ এপ্রিল ভোরে তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তর করা হয়। গত ১৯ এপ্রিল তার নমুনা হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হয় এবং ২০ এপ্রিল ওই নারী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বলে জানা যায়।
এর পর থেকে হাসপাতালজুড়ে কর্মরত চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্টদের মধ্যে করোনা আতঙ্ক বিরাজ করছে। চিকিৎসক স্বল্পতায় ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হয়েছে ১০০০ বেডের এই হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা।
এদিকে হাসপাতালে আক্রান্ত চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টদের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন বা আইসোলেশন ব্যবস্থা না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে কর্মরত চিকিৎসক ও আক্রান্তরা। তারা করোনা আক্রান্তদের জন্য হাসপাতালের কেবিনগুলো বরাদ্দ চেয়ে পরিচালক বরাবর চিঠি পাঠিয়েছে। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো সিদ্ধান্ত না দেয়ায় চিকিৎসকদের মাঝে চরম হতাশা বিরাজ করছে।
এ ব্যাপারে হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. লক্ষ্মী নারায়ণ মজুমদার জানিয়েছেন, চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্য বিভাগের সংশ্লিষ্টদের জন্য নগরীর তিনটি আবাসিক হোটেল ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। সেখানে করোনায় আক্রান্তরা কোয়ারেন্টিনে আছেন। এখন হাসপাতালে তাদের কেবিনের বরাদ্দ দেয়া হলে অন্যান্য রোগীদের জন্য সমস্যা সৃষ্টি হবে। সবার মাঝেই একটা করোনা আতঙ্ক থাকবে।
তিনি জানান, চিকিৎসকদের জন্য একটি বেসরকারি হাসপাতাল চেয়ে জেলা প্রশাসককে চিঠি দেয়া হয়েছে।
ডা. লক্ষ্মী নারায়ণ মজুমদার জানান, শেরপুরের নকলা উপজেলার অন্তঃসত্ত্বা এক নারীর করোনা শনাক্ত হয়। এতে পুরো হাসপাতালজুড়ে কর্মরত চিকিৎসক ও সংশ্লিষ্টদের মাঝে করোনা ছড়িয়েছে। ওই নারীর কারণে আক্রান্ত হয়েছেন হাসপাতালে কর্মরত ২৭ জন চিকিৎসক, ১৩ জন নার্স ও ৩২ জন স্টাফ। প্রতিদিন হাসপাতালে কর্মরতদের নমুনা পজিটিভ হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, গাজীপুরের মাওনা থেকে আসা অপর এক নারী গার্মেন্টস কর্মীর মাধ্যমেও চিকিৎসকসহ কয়েকজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।