মরণব্যাধি করোনাভাইরাসের কারণে সবকিছু বন্ধ হয়ে গেলেও পেটের ক্ষুধা তো আর আটকানো যাবে না। আর পরিবার ও নিজের ক্ষুধা নিবারণের জন্য দোকানের সামনে সহায়তার জন্য বসে আছেন ৬৫ বয়সোর্ধ্ব এক বৃদ্ধ। রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী ঝিনা রেলগেট এলাকার এক মুদিখানার দোকানের বারান্দায় খালি গায়ে বসে ছিলেন তিনি।
তাকে দেখে তার কাছে যান বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিন রেজা। তার কাছে প্রথমে জানতে চান, এখানে কেন বসে আছেন? জবাবে ওই বৃদ্ধ বলেন, বাড়িতে খাবার কিছুই নেই। কেউ সহযোগিতা করলে চাল কিনে নিয়ে বাড়ি যাব।
এ সময় তার কথা শুনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনটা স্থির করতে পারেননি। তাকে ১০ কেজি চাল, আলু, ডাল, তেল, লবণ, ডিম, পিঁয়াজ কিনে দেন। এমন ঘটনা ঘটেছে শনিবার বেলা ১১টায়। বৃদ্ধ ব্যক্তির নাম সাধন আলী গাইন। পিতা মরহুম লবাই আলী গাইন। বাড়ি আড়ানী পৌরসভার নুরনগর গ্রামে।
তার ৩ মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। যতটুকু জমি ছিল তা বিক্রি করে ৩ মেয়েকে বিয়ে দেন। এর মধ্যে একটি মাত্র ছেলে সাজান আলী। সেও বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। এ ছাড়া ৩ মেয়ের মধ্যে এক মেয়ের বিয়ের কিছুদিন পর স্বামী মারা গেছে। বর্তমানে ওই মেয়েটিও বাবার বাড়িতে। বৃদ্ধের কোনো আয় নেই। কোনো জমিও নেই।
বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে খাদ্য সংগ্রহ করেন। এই করোনা ভাইরাসের কারণে বাজারে কোনো মানুষও নেই। দু-একটা মানুষ আছে, তাদের কাছে গেলেও তেমন কোনো সহযোগিতা পাচ্ছেন না। ফলে চিন্তায় ঝিনা রেলগেটে এক মুদিখানার দোকানের বারান্দায় বসে ছিলেন তিনি।
এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খাদ্য অভাবে থাকা বৃদ্ধকে সহযোগিতা করেন। এ ছাড়া সরকারের পাশাপাশি তিনি বিত্তবানদের সহায়তার হাত বাড়ানোর আহ্বান জানান। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিন রেজা জানান,
পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে গিয়ে সবচেয়ে বেশি খেটে খাওয়া ও অসহায় মানুষগুলো ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। সরকার ইতিমধ্যেই খাদ্য সহযোগিতা শুরু করেছে। তবে সরকারের পাশাপাশি বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য বিত্তবানদেরও এগিয়ে আসা প্রয়োজন।