Breaking News

ধুঁকে ধুঁকে যুবকের মৃত্যু,করোনা সন্দেহে চিকিৎসা দেয়নি ৫ হাসপাতাল

করোনা আক্রান্ত সন্দেহে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির পর মারা গেছেন আল আমিন নামের এক যুবক। তার বাড়ি নওগাঁ জেলার রানীনগর উপজেলার অলংকার দিঘি গ্রামে। নারায়ণগঞ্জ ফেরত যুবক আল আমিন (২২) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন শনিবার রাত সাড়ে আটটায়। শনিবার সকালে তীব্র জ্বর, সর্দি, কাশি, ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে গ্রামে ফেরেন। তবে গ্রামের লোকেরা তাকে বাড়িতে রাখতে দেয়নি। নওগাঁ জেলা সদর হাসপাতাল, আদমদিঘি উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র,

রানীনগর উপজেলা হাসপাতালসহ পাঁচটা হাসপাতাল ঘুরেও কোনো চিকিৎসা না পেয়ে শনিবার বিকালে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে রাত সাড়ে আটটার দিকে আল আমিন মারা যান। মৃত যুবক আল আমিনের বাবা মোখলেসুর রহমান যুগান্তরকে জানান, তার ছেলে নারায়ণগঞ্জে একটি কাপড়ের দোকানে বিক্রয়কর্মীর কাজ করতেন। শনিবার সকালে সে প্রচণ্ড জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে বাড়িতে ফেরে।

এ সময় গ্রামের লোকেরা তাকে গ্রামে রাখতে বাধা প্রদান করেন। ফলে দ্রুত তাকে নওগাঁ জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে সেখানকার চিকিৎসকরা আল আমিনকে চিকিৎসা দিতে অস্বীকার করেন ও ফেরত পাঠান। উপায়ন্তর না দেখে অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে মোখলেসুর রহমান ছুটেন পার্শ্ববর্তী বগুড়ার আদমদিঘি উপজেলা হাসপাতালে। সেখানেও তাকে চিকিৎসা দিতে অস্বীকার করা হয়। পরে রানীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল মামুনকে জানালে তার হস্তক্ষেপে আল আমিনকে প্রথমে রানীনগর উপজেলা হাসপাতালে ও পরে আবার নওগাঁ জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়।

সেখান থেকে বিকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা আল আমিনকে ২৩ নং মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি করেন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে আল আমিন মারা যান। রামেক হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস যুগান্তরকে জানান, আল আমিনের লাশ রাতেই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে আল আমিন করোনায় নয়, মস্তিস্কের সংক্রমণ বা মেনিনজাইটিস নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। ভর্তির সময় তার শরীরে জ্বরের মাত্রা তীব্র ছিল। মাথা ব্যাথা ও গলা ব্যাথা ছিল।

মেডিকেলের ডেথ প্রতিবেদনের সূত্র উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, সর্দিজ্বর ও শ্বাসকষ্টসহ করোনার বিভিন্ন উপসর্গ থাকলেও আল আমিন মারা গেছেন মেনিনজাইটিস বা মস্তিস্কের সংক্রমণে। তবে পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়াই কীভাবে আল আমিনের মেনিনজাইটিস শনাক্ত হলো জানতে চাইলে সাইফুল ফেরদৌস কোনো উত্তর দেননি। এছাড়া রামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আল আমিনের করোনার কোনো নমুনা সংগ্রহ করেননি বলে জানান তিনি।

এদিকে নওগাঁর রানীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. কেএইচএম ইফতেখারুল আলম যুগান্তরকে জানান, শনিবার যখন আল আমিনকে আমাদের হাসপাতালে আনা হয় তখন তার তীব্র জ্বর ও শ্বাসকষ্ট ছিল। অবস্থা বিবেচনা করে তাকে আমরা নওগাঁ জেলা হাসপাতাল পাঠিয়ে দিই। সেখানে করোনার নমুনা সংগ্রহ করার কথা ছিল। সেটা করা হয়েছে কিনা তিনি জানেন না।আজ রোববার সকালে মৃত আল আমিনের বাবা মোখলেসুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, কোথাও তার ছেলের সুচিকিৎসা হয়নি।

তিনি ছেলেকে নিয়ে পাঁচটা হাসপাতালে ঘুরেছেন। কিন্তু কেউ চিকিৎসা দিতে রাজি হয়নি। পরে কালিগ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বাবলু ও ইউএনও আল মামুন সাহেবের সহযোগিতায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই শনিবার রাতে আল আমিন মারা যান। রোববার সকালে নিজ গ্রাম অলরংকারদিঘিতে আল আমিনের জানাযা ও দাফন সম্পন্ন হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন এলাকাবাসী।যুগান্তরের সৌজন্যে

Check Also

অধ্যাপক গোলাম আযম একটি নাম, একটি ইতিহাস

অধ্যাপক গোলাম আযম একটি নাম, একটি ইতিহাস। তিনি বিশ্বনন্দিত ইসলামী চিন্তাবিদ, ভাষা আন্দোলনের নেতা, ডাকসুর …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *