Breaking News

শহীদেরা ইসলামী আন্দোলনের প্রেরণার বাতিঘর -শিবির সভাপতি

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মোঃ সিরাজুল ইসলাম বলেছেন, ছাত্রশিবিরকে পথচলার শুরুতেই বাতিলপন্থীদের দ্বারা আক্রান্ত হতে হয়েছিল। বাতিলপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর হত্যা-নির্ভর রাজনীতির শিকার হয়ে সেদিন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ প্রান্তর শিবির নেতাকর্মীদের রক্তে লাল হয়ে গিয়েছিল। বর্বরদের সেই নৃশংসতা আজও অব্যাহত আছে। কিন্তু ছাত্রশিবির এক মুহুর্তের জন্যও দমে যায়নি। বরং শহীদদের স্বপ্ন পূরণে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। ১১ই মার্চের শহীদেরা ইসলামী আন্দোলনের প্রেরণার উৎস, প্রেরণার বাতিঘর।

তিনি আজ রাজশাহীর এক মিলনায়তনে ছাত্রশিবির রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার উদ্যোগে শহীদ দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচকের আলোচনায় এসব কথা বলেন। শাখা সভাপতি নাবিল আহমেদের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি সালমান ফারসির পরিচালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান। আরো উপস্থিত ছিলেন পাবনা জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাওলানা ইকবাল হোসেন, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় এইচআরডি সম্পাদক হাফেজ গোলাম রাব্বানীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

শিবির সভাপতি বলেন, ১৯৮২ সালের ১১ মার্চ একদিকে নির্মম ও বর্বতার অন্য দিকে চরম ধৈর্যের নিদর্শনের দিন। সেদিন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাগত ছাত্রদের সংবর্ধনার আয়োজন করে ছাত্রশিবির। কিন্তু ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্রলীগ, ছাত্রমৈত্রীসহ ইসলাম বিদ্বেষী সংগঠনসমূহ ছাত্রশিবিরের অগ্রযাত্রা রুখে দিতে একের পর এক ষড়যন্ত্রের নীলনকশা তৈরি করে ব্যর্থ হয়ে হত্যার পথ বেছে নেয়। বহিরাগত সন্ত্রাসীদের এনে শিবিরকর্মীদের উপর হামলা চালায় তারা। আহত হয় অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী ও শিবিরের নেতাকর্মীরা। সন্ত্রাসীদের হামলায় শাহাদাতের অমিয় সুধা পান করেন শহীদ সাব্বির ও শহীদ আবদুল হামিদ। পরদিন তাদের কাতারে যুক্ত হন শহীদ আইয়ুব আলী। আর দীর্ঘ ১০ মাসের আহতাবস্থায় থেকে ২৮ ডিসেম্বর মহান প্রভুর সান্নিধ্যে চলে যান শহীদ আবদুল জব্বার। সেদিন অকুতভয় শিবির নেতাকর্মীরা সর্বোচ্চ সাহসিকতা ও ধৈর্য্য দিয়ে নজিরবিহীন ইতিহাসের সৃষ্টি করে। নেতকর্মীরা জীবন দিয়েছিলেন কিন্তু কালেমার বানী প্রচার ও প্রতিষ্ঠার দৃঢ় প্রত্যয় থেকে সরে আসেননি।

তিনি বলেন, এই নৃশংস বর্বরতা ছিল পূর্বপরিকল্পিত। সেদিন বাতিলেরা ভেবেছিল নারকীয় তান্ডব চালিয়ে ছাত্রশিবিরকে নিশ্চিহ্ন করা যাবে। কিন্তু রক্ত ঝড়িয়ে আদর্শকে দমন করা যায়না বরং আন্দোলনের ভিত্তি আরও মজবুত হয়। যার উৎকৃষ্ট উদাহরণ আল্লাহর মেহেরবানীতে ছাত্রশিবিরের আজকের অবস্থান। সেই শহীদদের পথধরে এ পর্যন্ত ২৩৪ জন নেতাকর্মী জীবন বিলিয়ে দিয়েছে, করেছেন শাহাদাত বরণ। এখনো চলছে জুলুম নির্যাতন। কিন্তু ছাত্রশিবির নেতাকর্মীরা তাদের লক্ষ্য থেকে পিছু হটেনি এবং হটবেও না ইনশাআল্লাহ। ছাত্রশিবির নেতাকর্মীরা এই জুলুম নির্যাতন সহ্য করাকে ইসলামী আন্দোলনের অবিচ্ছেদ্য অংশ মনে করে। যাদেরকে হত্যা করে বাতিল শক্তি ইসলামী আন্দোলনকে দমিয়ে দিতে চেয়েছিল তারাই আজ ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের প্রেরণার উৎস। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি এই প্রেরণার পথ ধরে এ জমিনে একদিন সমৃদ্ধ সোনালী সমাজ নির্মিত হবে ইনশাআল্লাহ।

Check Also

অধ্যাপক গোলাম আযম একটি নাম, একটি ইতিহাস

অধ্যাপক গোলাম আযম একটি নাম, একটি ইতিহাস। তিনি বিশ্বনন্দিত ইসলামী চিন্তাবিদ, ভাষা আন্দোলনের নেতা, ডাকসুর …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *