Breaking News

দিল্লিতে মুসলমানদের উপর হত্যাযজ্ঞ ও সহিংসতার প্রতিবাদে জামায়াতের বিক্ষোভ

সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিল কট্টর হিন্দুত্ববাদী মোদী সরকারের মদদেই মুসলিম নিধনে মেতে উঠেছে উগ্রবাদীরা এবং দিল্লিতে মুসলমানদের উপর হত্যাযজ্ঞ ও সহিংসতার প্রতিবাদে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর শাখা।

বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নিয়ে জামায়াতের ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন ভারতের রাজধানী দিল্লিতে মুসলিমবিরোধী নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনকে কেন্দ্র করে উগ্রবাদী হিন্দুরা যে হত্যাযজ্ঞ, নির্যাতন আর বর্বরতা দেখিয়েছে তাতে শুধু মুসলমানরাই নয়, বিশ্বের শান্তিপ্রিয় প্রত্যেক মানুষের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে।

এই নৃশংস ঘটনায় অর্ধ শতাধিক মানুষ নিহত ও কয়েকশ মানুষ আহত হয়েছে। জয় শ্রীরাম স্লোগান দিয়ে মুসলমানদের বাড়ি-ঘরে বেছে বেছে হামলা ও পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এই বর্বরতায় একজন বৃদ্ধা জীবন্ত দগ্ধ হয়েছেন। বহু মসজিদ পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। মসজিদের মিনারে হনুমানের পতাকা উড়ানো হয়েছে। রাজপথে প্রকাশ্যে পিটিয়ে মুসলমানদের হত্যা করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন মুসলিম মহিলাদের প্রকাশ্যে নির্যাতন করা হয়েছে। আর এই সব বর্বরতা চালানো হয়েছে পুলিশের সামনে ও অনেক ক্ষেত্রে তাদেরই সহায়তায়। ভারত সরকার চলমান এই নৃশংসতার বিপরীতে জোড়ালো কোন প্রতিবাদ দেয়নি বা কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এতে প্রমাণ হয় মোদি সরকারের মদদেই মুসলিম নিধনে নেমেছে হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসীরা। এটা কোনোভাবেই কোনো সভ্য রাষ্ট্রের পরিচয় হতে পারে না।

এসময় নেতৃবৃন্দ বলেন, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনটি মুসলিমবিরোধী হওয়ায় গত কয়েকদিন যাবত ভারতের বিভিন্ন স্থানে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে প্রতিবাদী আন্দোলন করছে মুসলিমসহ বিবেকবান অন্যান্য নাগরিকগণ। চলমান এই আন্দোলনে একতরফা এবং অতর্কিত হামলা চালালে আন্দোলনকারীরা প্রতিরোধী অবস্থান নেয়। ফলে ব্যাপক সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। ইতোপূর্বে এ আইনটি নিয়ে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয় এবং সহিংসতার ঘটনা ঘটে। ভারতের সুপ্রিম কোর্টে আইনটিকে চ্যালেঞ্জ করে প্রায় ১০০ আবেদন জমা পড়ে।

জাতিসংঘ, ওআইসি, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, ইউরোপীয় পার্লামেন্টসহ বিভিন্ন গণতান্ত্রিক দেশ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এমনকি শান্তিপ্রিয় হিন্দুরাও এ আইনটি মেনে নেয়নি। নাগরিকত্ব সংশোধন আইনটি ভারতের জনজীবনকে অশান্ত করে তুলেছে।নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, ভারতে মুসলমানরা উদ্বাস্তু নয় বরং তারা ভারতের নাগরিক এবং সভ্য ও আধুনিক ভারতের কারিগর। প্রায় ৮০০ বছর যাবত মুসলমানরা ভারতকে গড়েছে।

দখলদার ব্রিটিশদের বিতাড়িত করতে লক্ষ লক্ষ মুসলিম জীবন দিয়েছে। আজও ভারতের উন্নতি অগ্রগতির অন্যতম নিয়ামক মুসলমানরা। সুতরাং এখন কোন সাম্প্রদায়িক আইন দিয়ে ভারতীয় মুসলমানদের তাড়ানোর ষড়যন্ত্র সফল হবে না। অবিলম্বে এই হত্যাযজ্ঞ, নির্যাতন, নিপীড়ন বন্ধ করতে হবে। হামলাকারী উগ্রবাদীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

নিহত, ক্ষতিগ্রস্ত মুসলিম পরিবারগুলোকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ ও বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইনটি বাতিল করতে হবে। একই সাথে আমরা ভারতের মজলুম মুসলমানদের পাশে দাঁড়াতে জাতিসংঘ, ওআইসি, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাসহ সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানাচ্ছি।বিজ্ঞপ্তি

Check Also

অধ্যাপক গোলাম আযম একটি নাম, একটি ইতিহাস

অধ্যাপক গোলাম আযম একটি নাম, একটি ইতিহাস। তিনি বিশ্বনন্দিত ইসলামী চিন্তাবিদ, ভাষা আন্দোলনের নেতা, ডাকসুর …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *