Breaking News

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ডা. শাহাদাত

আসন্ন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নির্বাচনে নগরের দলীয় সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেনকে মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি। এছাড়া বগুড়া-১ উপনির্বাচনে একেএম আহসানুল তৈয়ব জাকির ও যশোর-৬ আসনে মো. আবুল হোসেন আজাদকে মনোনয়ন দিয়েছে দলটি।

সোমবার চসিক নির্বাচনে মেয়র পদে ও দুটি আসনের উপনির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ শেষে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেয় বিএনপির পার্লামেন্টারি বোর্ড।

বিকালে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাক্ষাৎকার নেয়া হয়। পরে রাতে পার্লামেন্টারি বোর্ডের সভায় প্রার্থী চূড়ান্ত হয়। স্থায়ী কমিটিই দলের পার্লামেন্টারি বোর্ড। এতে লন্ডন থেকে স্কাইপেতে যুক্ত হয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্ব করেন। সভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়াও স্থায়ী কমিটির সদস্য ড খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান ছিলেন।

সভা শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে বিএনপি মহাসচিব আরো জানান, সভায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

গত ১৬ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এবং বগুড়া-১ ও যশোর-৬ আসনের উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। তফসিল অনুযায়ী, ভোট হবে হবে ২৯ মার্চ। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ২৭ ফেব্রুয়ারি, ১ মার্চ বাছাই ও ৮ মার্চ প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর ৯ মার্চ প্রতীক বরাদ্দের পর নির্বাচনী প্রচার শুরু হবে।

এই নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও সংসদে বিরোধী দল তাদের নিজ নিজ দলের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। আওয়ামী লীগ নগর কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিমকে প্রার্থী ঠিক করেছে। আর জাতীয় পার্টি নগর কমিটির আহ্বায়ক সোলায়মান শেঠকে প্রার্থী করেছে। বিএনপি সূত্র জানিয়েছে, মেয়র পদে নির্বাচন করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে কাজ করছেন। এমনকি চট্টগ্রামের নেতৃত্ব দিতে তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ ছেড়ে দেন। রাজনীতির মাঠেও সক্রিয় তিনি। নেতাকর্মীদের আপদে-বিপদে তিনি পাশে দাঁড়ান। এসব কারণে দলীয় হাইকমান্ডের সুনজর পড়ে ডা. শাহাদাত হোসেনের দিকে।

৩০ ডিসেম্বরের একাদশ সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি-বাকলিয়া) আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নেন ডা. শাহাদাত। কারাগারে থেকেই নির্বাচন করেন তিনি। সেই নির্বাচনে কারাগারে থেকে অংশ নিয়ে বিপুল ভোটে হেরে যান বর্তমান শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের কাছে। এরপর থেকে অবশ্য সিটি নির্বাচন সামনে রেখে কাজ শুরু করেন তিনি।

এর আগে ২০১৫ সালে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন এম মনজুর আলম। তিনি আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপিতে যোগ দিয়ে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টাও হন। কিন্তু নির্বাচনের দিন সকাল ১০টায় দলের নির্দেশে ভোট বর্জন নিয়ে তাকে সংবাদ সম্মেলন করতে হয়। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ ছিলেন তিনি। কিন্তু বিএনপির হাইকমান্ডের সিদ্ধান্ত মানতে তিনি বাধ্য ছিলেন। এ কারণে পরে তিনি বিএনপির সব পদ থেকে পদত্যাগ করেন।

২০১০ সালে চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে ৪ লাখ ৭৯ হাজার ১৪৫ ভোট পেয়ে নিজের রাজনৈতিক গুরু এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে প্রায় ৯৫ হাজার ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে মেয়র হয়েছিলেন বিএনপি প্রার্থী মনজুর। পরে তাকে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা করা হয়। বিএনপির টিকিটে মেয়র হলেও মনজুর আওয়ামী লীগের খোলস ছাড়তে পারেননি। সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি করতেন নগর আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি মহিউদ্দিন চৌধুরীকে। এ ছাড়া বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের নামে একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান করে সেটির ব্যানারে সমাজসেবামূলক কার্যক্রম চালিয়ে গেছেন। এ নিয়ে বিএনপি নেতাদের ক্ষোভ ছিল তার প্রতি। তবু পরের নির্বাচনে তাকেই ধানের শীষের টিকিট দেয় বিএনপি। কিন্তু মনজুর নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী আ জ ম নাছিরের কৌশলের কাছে কুলিয়ে উঠতে পারেননি।

এর আগে ১৯৯০ সালে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের উন্নীত হওয়ার পর বিএনপি থেকে মেয়র পদে দায়িত্ব পালন করে সাবেক মন্ত্রী ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন। মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন ১৯৯১ সালের ১২ মে থেকে ১৯৯৩ সালের ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। এরপর টানা তিনবার চট্টগ্রামের মেয়র হন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা মহিউদ্দিন চৌধুরী। এমনকি ২০০১ সালে বিএনপির সরকারের সময় অনুষ্ঠিত নির্বাচনেও মীর নাছিরকে প্রায় এক লাখ ভোটে হারান মহিউদ্দিন। তবে মহিউদ্দিনের কর্তৃত্বে ভাগ বসান তারই শিষ্য মনজুর। তিনি বিএনপিতে যোগ দিয়ে ধানের শীষের টিকিটে মহিউদ্দিনকে হারিয়ে দেন। পরবর্তীতে মনজুর আলম ২০১০ সালের ২০ জুন থেকে ২০১৫ সালের ২৭ মার্চ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।

Check Also

Police arrests Jamalpur district Ameer and 13 other party activists; Acting Secretary General of BJI condemns

Acting Secretary General of Bangladesh Jamaat-e-Islami Maulana ATM Masum has issued the following statement on …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *