করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ইরানে আটজন মারা গেছেন। রোববার দেশটি এমন তথ্য জানিয়েছে। যা চীনের বাইরে কোনো দেশে সর্বাধিক মৃত্যুর ঘটনা। এতে কভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে বেইজিংয়ের প্রতিবেশী দেশগুলোকে গভীর সংকটে পড়তে হয়েছে বলেই ধরে নেয়া হয়েছে।ইতিমধ্যে ইরানের সঙ্গে স্থলসীমান্ত বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে চার প্রতিবেশী তুরস্ক,
পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও আর্মেনিয়া। তাদের মধ্যে তিনটি দেশ তেহরানের সঙ্গে বিমান যাতায়াতে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে।-খবর এএফপি। ইসলামিক প্রজাতন্ত্রটির সঙ্গে বিমান চলাচল আগেই নিষিদ্ধ করে দিয়েছে ইরাক ও কুয়েত। লেবাননেও ৪৫ বছর বয়সী এক নারী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
তিনি ইরানের কুয়াম শহর ভ্রমণ করেছিলেন। রোববার নতুন করে তিন করোনাভাইরাস রোগীর মৃত্যুর কথা জানিয়েছে ইরান। আর গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ১৫ রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এতে দেশটিতে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৪৩ জন আর মারা গেছেন আট রোগী। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কিয়ানুশ জাহানপুর বলেন, তেহরানে নতুন চার কোভিড-১৯ রোগী,
পবিত্র শহর কুয়ামে সাত, গিলানে দুই ও মারকাজি ও টোনেকাবোনে একজন করে রোগী শনাক্ত হয়েছেন। প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ হিসেবে দেশজুড়ে ১৪টি প্রদেশের সব স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য শিক্ষাকেন্দ্র বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এছাড়া চারুকলার প্রদর্শনী, কনসার্ট ও চলচ্চিত্র প্রদর্শনীও এক সপ্তাহের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কুয়ামের মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান মোহাম্মদ রেজা গাধির বলেন,
আমরা করোনা আক্রান্তের সামনের সারিতে রয়েছি। আমাদের সহায়তা দরকার। আফগানিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের কার্যালয় জানায়, নোভেল করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ইরান থেকে সব যাত্রীদের আসা-যাওয়া স্থগিত রাখা হয়েছে। ইরানের সঙ্গে স্থলসীমান্ত বন্ধের কথা নিশ্চিত করেছেন পাকিস্তানের এক প্রাদেশিক কর্মকর্তা। আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের সীমান্ত দিয়ে ইরানে ব্যাপক লোকজনের যাতায়াত ঘটে আসছে।
পাচারকারীরা যেমন এই সীমান্ত ব্যবহার করেন, তেমনি ইরানে কয়েক লাখ আফগান শরণার্থী বসবাস করেন। এতে সহজেই সীমান্ত দিয়ে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা বাড়ছে। ইরানের সঙ্গে অস্থায়ীভাবে স্থলসীমান্ত বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে তুরস্ক।
তবে বিমান চলাচল স্থগিত করলেও বর্হিগমন অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া ইসলামিক প্রজাতন্ত্রটির সঙ্গে একমাত্র সীমান্ত তল্লাশিচৌকির মাধ্যমে প্রবেশ ও বিমানের ফ্লাইট স্থগিত করার কথা জানিয়েছে আর্মেনিয়া। রোববার চীনে আরও ৯৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এতে দেশটিতে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল দুই হাজার ৪৪২ জন। আর নতুন সংক্রমণ ঘটেছে ৬৪৮ জনের শরীরে। বিশ্বজুড়ে এখন পর্যন্ত আশি হাজার লোক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। কিন্তু চীনের তুলনায় ইরানের মৃত্যু আনুপাতিকহারেই বেশি। প্রতি পাঁচ আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে একজন মারা যাচ্ছেন ইরানে।