শুক্রবার মহান শহিদ দিবস। ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য দেশের সব স্থানে শহিদ মিনারকে ধুঁয়ে মুছে সাজানো-গোছানো হচ্ছে। কিন্তু টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার মির্জাবাড়ী ইউনিয়নের মির্জাবাড়ী বাজার শহিদ মিনারটিতে বসছে মাছের পাইকারি বাজার। বাঙালি জাতির আবেগ ও শ্রদ্ধার এ স্মৃতি স্তম্ভটি এখন নোংরা আবর্জনায় ভরপুর।
বুধবার বিকালেও এখানে মাছের বাজার বসেছিল। মির্জাবাড়ী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এবং শোলাকুড়ি কলেজের প্রভাষক এমদাদুল হক মজনু জানান, ১৯৯৭ সালে বাজারের খাস জমিতে শহিদ মিনারটি নির্মিত হয়। এটি এ ইউনিয়নের একমাত্র শহিদ মিনার। মির্জাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ, বাজার কমিটি, ইউনিয়নের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন এ শহিদ মিনারেই প্রতিবছর শ্রদ্ধা নিবেদন করে থাকেন।
এছাড়াও বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবসসহ সব ধরনের জাতীয় দিবসে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড শহিদ মিনার চত্বরকে ঘিরে সম্পন্ন হয়। বাজারের ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, একটি স্বার্থান্বেষী মহল শহিদ মিনার চত্বরকে ঘিরে প্রত্যেক দিন বিকালে মাছের পাইকারি বাজার বসান। এতে শহিদ মিনারের পবিত্রতা বিনষ্ট হয়। স্থানটি নোংরা হয়।
মির্জাবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সম্পাদক আজাহার আলী মাস্টার জানান, বাজারের খাস জায়গা দখল করে নিয়েছিল স্থানীয় প্রভাবশালীরা। এমতাবস্থায় তাদেরকে উচ্ছেদ করে বাবুল শিং নামক এক ঠিকাদারের বদান্যতায় বাজারের এক প্রান্তে শহিদ মিনারটি করা হয়। বাজারে জায়গা কম। এজন্য হয়তো বাজার কমিটি শহিদ মিনার চত্বরে মাছের বাজার বসিয়ে থাকেন। তবে এটি দেখতে খুব খারাপ দেখায়। শহিদ মিনারটি বাজার থেকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার জন্য উপজেলা প্রশাসনের নিকট আবেদন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
মির্জাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান আলী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আজ থেকে এখানে আর মাছের বাজার বসতে দেওয়া হবে না। শহিদ মিনারটি ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
মধুপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফা জহুরা বলেন, শহিদ মিনার চত্বরে মাছের বাজার বসানোর খবরটি খুবই দুঃখজনক। বিষয়টি কঠিনভাবে দেখছি এবং এ ব্যাপারে তড়িত্ ব্যবস্থা নেব।