Breaking News

সারোয়ার ইমরান যা বললেন টাইগারদের টেস্ট উন্নয়ন নিয়ে

টেস্ট ক্রিকেটের মাধ্যমেই একটি দলের মানদণ্ড বিবেচনা করা হয়। অথচ ১৯ বছর ধরে টেস্ট খেলেও আভিজাত্যের এ ফরম্যাটটি সেভাবে রপ্ত করতে পারেনি বাংলাদেশ। সবশেষ খেলা ৬ টেস্টের মধ্যে পাঁচটিতে ইনিংস ব্যবধানে হেরে যায় টাইগাররা।

টেস্ট ক্রিকেটে টাইগারদের ব্যর্থতায় রীতিমতো হতাশ বাংলাদেশের অভিষেক টেস্ট দলের প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করা সারোয়ার ইমরান। ক্রিকেটের এ আদী ফরম্যাটে উন্নয়নে বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন দেশের এ অভিজ্ঞ কোচ।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় যুগান্তরের সঙ্গে একান্ত আলাপে সারোয়ার ইমরান বলেন, ২০০০ সাল থেকে টেস্ট ম্যাচ খেলার পরও ইনিংস পরাজয় মানতে খুবই কষ্ট হচ্ছে। এর চেয়ে হতাশার আর কিছুই হতে পারে না। তবে আমরা আসলে সেভাবে টেস্ট ম্যাচ খেলারও সুযোগ পাই না।

অন্য দলগুলো যেভাবে ধারাবাহিক টেস্ট ম্যাচ খেলে আমরা সেই সুযোগ পাই না। কালে-ভদ্রে টেস্ট ম্যাচ খেললে এমন বাজে ফল হবেই।আমরা যেমন ওয়ানডে ম্যাচ বেশি খেলি তাই তুলনামূলক ওয়ানডেতে ভালো হচ্ছে। টেস্টেও যদি নিয়মিত খেলা থাকে তাহলে উন্নয়ন হবে।

টেস্ট ক্রিকেটের উন্নয়নে করণীয় প্রসঙ্গে দেশের এ অভিজ্ঞ কোচ বলেন, টেস্ট ক্রিকেটে ভালো করতে হলে আমাদের চারদিনের ম্যাচ বেশি করে খেলার অভ্যাস গড়তে হবে। ঘরোয়া যে লংগার ভার্সন প্রতিযোগিতাগুলো আছে সেখানে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা ও মিডিয়া কাভারেজ বাড়াতে হবে।

বিসিএল ও জাতীয় লিগসহ লংগার ভার্সনের যে প্রতিযোগতিগুলো অছে সেখানে সাধারণত স্পিনাররাই বেশি বোলিং করে। পেস বোলারদের তেমন পাওয়া যায় না। অথচ আন্তর্জাতিক লেভেলে গিয়ে ব্যাটসম্যানদের বিশ্বসেরা পেস বোলারদেরই মোকাবেলা করতে হয়। ঘরোয়া লিগে যদি পেস বোলিং খেলার অভ্যাস না থাকে তাহলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গিয়ে কোনো ব্যাটসম্যানের পক্ষেই ভালো করা সম্ভব নয়।

টেস্ট ক্রিকেটের উন্নয়নে এটাও একটা বড় ফ্যাক্টর।তাছাড়া ঘরোয়া আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের উইকেট সম্পূর্ণ আলাদা। ঘরোয়া ক্রিকেটে মানসম্পন্ন উইকেটে খেলা না হলে আন্তর্জাজিত পর্যায়ে গিয়ে ভালো করা কঠিন। পারিশ্রমিকও একটা ব্যাপার আছে। ঢাকা লিগে ওয়ানডে ফরম্যাটে খেললে ক্রিকেটারা যে পারিশ্রমিক পান, চারদিনের ম্যাচ খেললেও যদি একই পারিশ্রমিক পান তাহলে লংগার ভার্সন ক্রিকেট খেলার আগ্রহ বাড়বে কি করে

নির্দিষ্ট পরিকল্পনার অভাব:গত সপ্তাহে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে যে দলটা দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে এল তারা কিন্তু একদিনে এই পর্যায়ে আসেনি। তাদের নিয়ে দীর্ঘ দুই বছরের পরিকল্পনা ছিল। তারা একই প্ল্যাট ফর্মে দীর্ঘদিন ছিল। তাদের ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে বিভিন্ন কন্ডিশনে বিভিন্ন প্রতিপক্ষের সঙ্গে খেলানো হয়েছে।

তার ফল আমরা পেয়েছি।জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের নিয়ে আমাদের লংটাইম কোনো পরিকল্পনা নেই। দীর্ঘ সময়ের জন্য পরিকল্পনা না করা হলে ভালো করা আদৌ সম্ভব নয়। এ ছাড়া সবশেষ আফগানিস্তানের সঙ্গে ঘরের মাঠে যে দলটা খেলল, ভারত সফরে দেখা গেল বেশকিছু পরিবর্তন।

এরপর পাকিস্তান সফরেও একই অবস্থা, দলে একাধিক পরিবর্তন। এখন আবার জিম্বাবুয়ে সিরিজে কয়েকজনকে বাদ দেয়া হয়েছে। ক্রিকেটাররা এভাবে দলে আসা-যাওয়ার মধ্যে থাকলে ভালো করবে কি করে? এতে ক্রিকেটারদের মধ্যে হতাশা কাজ করে। পারফর্ম করতে না পারলেই বাদ পড়ে যাব, এমন শঙ্কার মধ্যে থেকে কোনো ক্রিকেটারের পক্ষেই ভালো কারা সম্ভব নয়।

যাকে দলে নেয়া হবে তাকে যথাযথ সুযোগ দিতে হবে। সে যদি ফেল করে তাহলে নতুন কাউকে ভাবা হবে। কিন্তু হাতে গোনা কয়েকটা ম্যাচ দেখে বাদ দেয়া ঠিক নয়। এসন কারণেই আমরা ভালো মানের টেস্ট ক্রিকেটার পাচ্ছি না, আর টেস্টেও উন্নয় হচ্ছে না।আমরা হয়ত অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, ভারত ও পাকিস্তানের মতো বড় দলগুলোকে হারিয়েছি, সেটা ঠিক আছে।

কিন্তু সেটা ওয়ানডেতে। টেস্টে আমাদের তেমন কোনো সাফল্য নেই বললেই চলে। বড় কোনো দলকে হারানোর তেমন কোনো স্মৃতিও আমাদের নেই। টেস্টে ভালো করতে না পারলে অন্যরা আমাদের মূল্যায়নও করবে না, কাজেই টেস্ট ক্রিকেটের উন্নয়নে আমাদের এখনই সুদূর প্রসারি পরিকল্পনা করা উচিত।যুগান্তর

Check Also

অধ্যাপক গোলাম আযম একটি নাম, একটি ইতিহাস

অধ্যাপক গোলাম আযম একটি নাম, একটি ইতিহাস। তিনি বিশ্বনন্দিত ইসলামী চিন্তাবিদ, ভাষা আন্দোলনের নেতা, ডাকসুর …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *