Breaking News

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মুগ্ধতায় রং ছড়ালো বর্ণিল প্রজাপতি

ইট-পাথরের নান্দনিক নগরের বাসিন্দাদের জীবনে কেবলই যান্ত্রিকতার ছোঁয়া। আধুনিক সংস্কৃতিমনা রাজধানীবাসীর প্রকৃতির সান্নিধ্যে আনার মেলার আয়োজন নিতান্তই বেশি নয়। শহর কিংবা গ্রামের জনজীবনে যে সব প্রাণী আনন্দের উদ্রেক ঘটায়, তার মধ্যে প্রজাপতি অন্যতম। যেন এক অজানা অকৃত্রিম ভালবাসা মিছে থাকে প্রজাপতির ডানায়।

তাই কনকনে শীতে রাজধানীর অদূরেই শুক্রবার বসেছিল বিনোদনের এক ভিন্নধর্মী মেলা। অর্ধশত প্রজাতির বর্ণিল ডানাওয়ালা প্রজাপতি আনন্দ বিলিয়েছে মেলায়। এতে পদচারণা ছিল সব বয়সের মানুষের। বিশেষ করে শিশু-কিশোরদের প্রজাপতির রূপ ধারণের দৃশ্য ছিল চোখে পড়ার মতো। নিঃসন্দেহে মধুর মমতায় মেলাটি হাজার ব্যস্ততার মাঝেও দর্শনার্থীদের বেঁধেছিল প্রকৃতির মায়ায়।

মেলায় শিশু কিংবা বৃদ্ধ, কিশোর কিংবা কিশোরী সবাই ছিল উচ্ছ্বাসিত। তাইতো পুরো ক্যম্পাসটাই ছিল প্রাণবন্ত। বাহারি পোশাকে নানান মানুষ আর প্রজাপতির সাজে শিশুদের পদারচণায় সবুজের এ ক্যাম্পাস রূপ নিয়েছিল স্বর্গোদ্যানে। দিনটি স্মরণীয় রাখতে আলোকচিত্রীদের উপস্থিতিও ছিল সরগরম। তাদের দেখা গেছে ‘হ্যামিলিনের বাঁশিওয়ালা’র রূপে। প্রজাপতির সঙ্গে মিতালী আর সখ্যতার স্থিরচিত্র ধরতে সবাই যেন ছুটছে তাদের পিছে।

‘উড়লে আকাশে প্রজাপতি, প্রকৃতি পায় নতুন গতি’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে শুক্রবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজনে এটি ১০ম মেলা।বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের উদ্যোগে ২০১০ সাল থেকে নিয়মিত অনুষ্ঠিত হচ্ছে ব্যতিক্রমধর্মী প্রজাপতি মেলা।

এদিন বেলা সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনের সামনে মেলার উদ্বোধন করেন জীব বিজ্ঞান অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. আব্দুল জব্বার হাওলাদার। উদ্বোধনের পর মনোজ্ঞ নৃত্য শেষে বের হয় বর্ণাঢ্য র‌্যালি। দিনব্যাপী মেলার অন্যান্য আয়োজনের মধ্যে ছিল- শিশু কিশোরদের প্রজাপতি বিষয়ক ছবি আঁকা প্রতিযোগিতা, প্রজাপতির আলোকচিত্র প্রদর্শনী, প্রজাপতি বিষয়ক আলোকচিত্র প্রতিযোগিতা, জীবন্ত প্রজাপতি প্রদর্শন, শিশু-কিশোরদের প্রজাপতি ও প্রকৃতি বিষয়ক কুইজ,

প্রজাপতির আদলে ঘুড়ি উড্ডয়ন, বারোয়ারি বিতর্ক, প্রজাপতি চেনা প্রতিযোগিতা, প্রজাপতি বিষয়ক ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী ও সবশেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। মেলা উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তন চত্বরসহ কয়েকটি স্থানে জীবন্ত প্রজাপতি প্রদর্শন করা হয়। এর আগে প্রজাপতি বিষয়ক গবেষণায় বিশেষ অবদানের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এম এ বাশারকে ‘বাটারফ্লাই অ্যাওয়ার্ড-২০১৯’ ও সবুজবাগ সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী অরুণাভ ব্রুনোকে ‘বাটারফ্লাই ইয়াং ইনথুসিয়াস্ট’ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।

সমাপনী অধিবেশনে মেলার আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘প্রকৃতি রক্ষায় প্রজাপতির গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। কিন্তু অবকাঠামোগত উন্নয়নের ফলে গাছ কাটা, লতা ও গুল্ম কমে যাওয়া, জলবায়ু পরিবর্তন তথা অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, অতি তাপমাত্রা প্রভৃতির কারণে প্রজাপতির সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। তাই প্রজাপতি সংরক্ষণে মানুষের সহমর্মিতা ও সচেতনতা জরুরি।’যুগান্তরের এর সৌজন্যে

Check Also

৫৬ হাজার শিক্ষক নিয়োগ হচ্ছে

অবশেষে ৫৬ হাজার শূন্য পদে শিক্ষক নিয়োগ দিতে যাচ্ছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *